শুরু হয়ে গেছে রমজান মাস। রোজা রাখার পর একটি বিশেষ আনন্দের মুহূর্ত হচ্ছে ইফতার।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমার বান্দাদের মধ্যে তারা আমার বেশি প্রিয়, যারা দ্রুত ইফতার করে (তিরমিজি, আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৬০, পৃষ্ঠা: ১৩১)। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যত দিন লোকেরা ওয়াক্ত হওয়ামাত্র ইফতার করবে, তত দিন তারা কল্যাণের ওপর থাকবে (বুখারি, সাওম অধ্যায়, হাদিস: ১৮৩৩)।’
আমরা সবাই চাই সারা রমজান এ একদিন হলেও পরিবার এর সবাইকে নিয়ে একটু ভালো কিছু খেতে। কিন্তু চারপাশে এতো ভেজাল আর অস্থিরতার ভিড়ে কোথায় যাবেন পরিবারের সবাইকে নিয়ে!
এছাড়া যারা ডায়েট করছেন অথবা বাইরের খাবার এড়িয়ে চলতে চান সবার কথা চিন্তা করে আমাদের একদিনের রাজকীয় ইফতার রেসিপি।
এই রেসিপি তা এতটাই স্বাস্থকর ও রাজকীয় যে, আপনার পরিবারের সবাই খুবই পছন্দ করবেন।
এছাড়া আপুরা যারা ইফতার এ পরিবার এর সবাইকে নতুন কিছু দিয়ে চমকে দিতে চান তাদের জন্য অসাধারণ হবে এই রেসিপিটি।
চলুন জেনে নেই কিভাবে সাজাবেন আপনার রাজকীয় ইফতার এর টেবিলটি……
বাদশাহি ড্রিংক মিক্স
আভিজাত্য এবং রাজকীয়তায় এই জাফরান বাদাম দিয়ে তৈরি ড্রিংক মিক্সটি অবশ্যই সবার ইফতারে প্রথম আইটেম হিসেবে থাকে। দুধ জাল করে ড্রিংক মিক্স এবং আইস কিউব দিয়ে বানিয়ে ঠান্ডা ঠান্ডা এই ড্রিংকটি সত্যিই প্রান জুড়িয়ে দেয়। এছাড়াও খুব অল্প সময়ে রাজকীয় ড্রিংক পাওয়া সত্যিই তৃপ্তিদায়ক। তবে এলিক্সার ড্রিংক মিক্সটিও রাজকীয় ইফতারে রাখতে পারেন।
চীয়া লেমোনেড
আমি সাধারণত রোজায় দুই ধরনের ড্রিংক খেতে পছন্দ করি। বাদশাহি ড্রিংক মিক্স কিছুটা এক্সপেন্সিভ এবং ভারি ড্রিংক হওয়ায় অল্প পরিমানে খেতে হয়। তাই রোজায় হাইড্রেশন বজায় রাখতে দুই রকম ড্রিংক খেলে একঘেয়েমি ভাব কেটে যায়। কিছুটা লাইট এবং রিফ্রেশিং এর জন্য যেকোনো ফ্রুটস জুস অথবা চীয়া লেমোনেড সাথে রাখতে পারেন। তবে চিনির পরিবর্তে হাল্কা লবণ অথবা পিংক সল্ট দিয়ে খেয়ে দেখতে পারেন যা অনেক রিফ্রেশিং।
পরোটা-হালিম
শাদলিন্সের হালিম মিক্স দিয়ে খুব সহজেই বাসায় হালিম রান্না করে নেয়া যায়। সারাদিন রোজা রেখে বাহিরের হালিম খেলে প্রচুর গ্যাস বদহজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আমরা সব সময় বাসায় বানানো হালিম মিক্স রান্না করে নেই। আর হালিমের সাথে পরোটা তো থাকছেই। তবে প্রতিদিন ভারি পরোটা ওজন বাড়িয়ে ফেলতে পারে। যারা সাস্থ্য সচেতনত শুধুমাত্র প্রথম দিন অথবা স্পেশাল ডে তে খেতে পারেন। অথবা তেল ছাড়া মিডিয়াম সাইজ একটি পরোটা খেতে পারেন। এছাড়া ভিন্ন হেলদি রেসিপি পেতে এই লিংকে ক্লিক করুন।
হেলদি সালাদ
রাজমা সালাদ অথবা চিকপিস সালাদ পছন্দ করে নিতে পারেন পরোটা এবং হালিমের সাথে। অথবা কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই শশা, টমেটো, গাজর, আপেল কিউব করে কেটে লেবুর রস, লবন এবং মিক্সড হার্ব দিয়ে মাখিয়ে নিতে পারেন। এছাড়াও বিভিন্ন সালাদ ড্রেসিং বাসায় বানিয়ে মজার সালাদ বানিয়ে নেয়া যেতে পারে।
খেজুর এবং ড্রাই ফ্রুটস
রোজায় খেজুর ছাড়া চলেই না। তাছাড়া এটা সুন্নতও। প্রথম রোজায় রাজকীয় ইফতারে মেদজুল অথবা মরিয়ম খেজুর রাখতে পারেন। অথবা খেজুর কেটে ভিতরে কাঠবাদাম/পিনাট বাটার দিতে পারেন। তবে খেজুরের পাশাপাশি এপ্রিকট, তীন ফল এবং ড্রাই কিইয়ি রাখতে পারেন। তাজা ফল ফালুদায় এবং জুসে রাখায় এখানে শুধু ড্রাই ফ্রুটস মেনুতে রাখা হয়েছে।
ফালুদা
ইফতারে মাগরিবের নামাজের পর শরীরকে শান্ত এবং ঠান্ডা রাখতে ফালুদার জুড়ি নাই। ফালুদা মিক্স দুধে জাল দিয়ে সাথে বিভিন্ন ফল, আইস্ক্রিম এবং বরফকুচি দিয়ে বানিয়ে নিন মজাদার ইফতার।
অনেকেই ভাবতে পারেন এটা আর তেমন কি রাজকীয়। তবে আমাদের বেশিরভাগ ফলোয়ারই যথেষ্ট সাস্থ্য সচেতন এবং হেলদি খেতে পছন্দ করে। তাদের কাছে এই মেনুটা কিছুটা ভারি এবং কিছুটা রাজকীয়ই বটে। তাছাড়া শরীরের জন্য এই পরিমান খাবার যথেষ্ট যেখানে প্রয়োজনীয় সব উপকরন রয়েছে। তাছাড়া অতিরিক্ত ভাজাপোড়া এবং অতিরিক্ত খাবার আমি খুবই অপছন্দ করি। সারাদিন রোজা রেখে অতিরিক্ত খাবার বানানো যেমন কস্টকর তেমনি খুব বেশি খাবার খাওয়া যায় না ফলে খাবার অপচয়ও হয়ে থাকে। তাই যতটুকু খাওয়া প্রয়োজন এবং যতটুকু খেতে পারবেন সেই অনুপাতে ইফতার বানিয়ে নিন।
এই মেনু শুধুমাত্র মোটামুটি রাজকীয় ভাবে ইফতারের জন্য এবং আমরা সাধারণত প্রথম রোজাতেই খেয়ে থাকি। বাকি দিন গুলোর জন্য কম বাজেটে দই চিড়া এবং বার্লি রোজার ইফতার তালিকায় রাখতে পারেন। আর বাজেট বেশি হলে মুজলি/গ্র্যানোলা রাখতে পারেন। এছাড়াও রমজানে কাজকে সহজ করতে আমাদের বেসন মিক্স, পেয়াজু মিক্স সহ নানান রেডি মিক্স রয়েছে।
ইফতারের এই মেনু ভালো লাগলে এবং কেউ খেয়ে থাকলে অবশ্যই লাইক কমেন্ট করে আমাদের জানাবেন। এছাড়াও যেকোনো ফিডব্যাক আমাদের জানাবেন যাতে আমরা আমাদের কাজ সম্পর্কে আরও সচেতন হতে পারি। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের পাশে থাকার জন্য।